শীতকালে বেড়ে যায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা? ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার সঠিক পদ্ধতি

Share With Your Friends

ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি

অনেক সময় আমরা দেখেছি আমাদের পরিবারের ছোট বাচ্চাদের এবং বৃদ্ধ মানুষদের শীতকাল পড়লেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়, যা আমাদের কাছে খুবই চিন্তার একটি বিষয়। 

শীতকালে বাতাসের তাপমাত্রা যখন অনেক কমে যায় তখন আমাদের শ্বাসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বৃদ্ধি পায়। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অনেক সময় আমাদের অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্টেরয়েড ঔষধ ও গ্রহণ করতে হয়। 

তাই শীতকালের সাথে আমাদের রেস্পেটরি সিস্টেম বা শ্বাস যন্ত্রের সম্পর্ক সম্বন্ধে আমাদের অবগত হওয়া খুবই প্রয়োজন।  তাই আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার উপায় সম্পর্কে। 

 

শীতকালে শ্বাসকষ্টের সমস্যা কেন হয়? 

সাধারণত আমাদের শরীরের তাপমাত্রা ৯৬ থেকে ৯৮ ডিগ্রি ফারেনাইট হয়ে থাকে, কিন্তু শীতকালে বাতাসের তাপমাত্রা অনেক বেশি কমে যায় যা আমাদের ফুসফুসের জন্য একদমই উপকারী নয়। 

  • যখনই ঠাণ্ডা বাতাস আমাদের ফুসফুসে বা শ্বাসযন্ত্রে সরাসরি পৌঁছায় তখন আমাদের ফুসফুস বা শ্বাসযন্ত্র প্রতিক্রিয়া করা শুরু করে। যে সমস্ত ব্যক্তিদের ঠান্ডা বাতাসে অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাদের ঠান্ডা বাতাসের কারণে শ্বাসকষ্ট হওয়া শুরু হয়ে যায়। 
  • শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা অনেক কমে যায় যার ফলে বাতাসে ধুলোবালি বা দূষণ বৃদ্ধি পায়। এই দূষণযুক্ত বাতাস গ্রহণ করা আমাদের ফুসফুস এবং স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকারক যার ফলস্বরূপ আমাদের ফুসফুসে বিভিন্ন প্রকার ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। ফুসফুসে সংক্রমণের ফলে আমাদের শ্বাসকষ্ট হওয়ার প্রবণতা ও বৃদ্ধি পায়। 
  • শীতকালে সকাল বেলা কুয়াশা এবং দূষণযুক্ত ধোঁয়া মিশে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে যা আমাদের ফুসফুসের জন্য ভীষণ ক্ষতিকারক। তাই ধোঁয়াশাযুক্ত পরিবেশে দীর্ঘক্ষণ থাকলে আমাদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ফলস্বরূপ শ্বাসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 
  • শীতকালে যদি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয় তাহলে খুব সহজেই আমাদের শরীর ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারে। শুধু তাই নয় যদি কোন মানুষের পূর্ব থেকে হাঁপানি রোগ বা অ্যাজমা রোগ থাকে তাহলে শীতকালে সেই রোগ বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভাবনা থাকে দূষিত পরিবেশের জন্য। 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : HMPV Virus কি এবং কতটা ক্ষতিকারক? লক্ষণ এবং সাধারণ প্রতিকার

 

ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা কম করার উপায় : 

যাদের শ্বাসকষ্ট এবং সর্দি-কাশির প্রবণতা অনেক বেশি তাদের শীতকালে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। 

  • হঠাৎ করে ঠান্ডা না লেগে যায় তার জন্য সব সময় আমাদের শীতের পোশাক পরা উচিত। কান এবং নাক কে ঢেকে রাখা উচিত যাতে সরাসরি ঠান্ডা বাতাস না লাগে। 
  • দূষিত পরিবেশ অথবা অপরিষ্কার পরিবেশে যাওয়া একদমই উচিত নয়। তার কারণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেশিক্ষণ সময় কাটালে ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। 
  • গৃহপালিত পশু বা পাখি কে পরিষ্কার করানো বা তাদের বাসস্থান পরিষ্কার করার পূর্বে ভালো করে নিজেদের হাত এবং মুখ ঢেকে রাখা উচিত। তার কারণ গৃহপালিত পশু এবং পাখি থেকে অ্যালার্জি সমস্যা হয়ে থাকে যা পরবর্তীকালে শ্বাসকষ্টের রূপ ধারণ করে। 
  • শীতকালে বেশি পরিমাণ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। তার কারণ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাদ্য আমাদের রেস্পেটরি সিস্টেম এর কার্যকরিতা কে উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 
  • নিয়মিত ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ করা উচিত। নিয়মিত ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ করলে আমাদের শরীরের কার্যকারিতা অনেক বৃদ্ধি পায় এবং দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। নিয়মিত ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ আমাদের ফুসফুসের কার্যকারিতাকে অনেক উন্নত করে। 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ সম্পর্কে অবাক করা ১০ টি তথ্য

 

বিশেষ দ্রষ্টব্য : যদি আপনার শ্বাসকষ্ট জনিত কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন। কারণ ঠান্ডা ছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে আপনার শ্বাসকষ্টের জন্য। 

 


Share With Your Friends