ক্যাপসিকামের উপকারিতা সম্পর্কে অবিশ্বাস্য ৯ টি তথ্য

Share With Your Friends

ক্যাপসিকামের উপকারিতা

ক্যাপসিকাম বা বেল পেপার নামে পরিচিত আমাদের দেশে এই ফল। সর্বপ্রথম ক্যাপসিকাম দক্ষিণ আমেরিকায় পাওয়া যায় এবং পরবর্তী সময়ে সারা বিশ্বে। ক্যাপসিকাম এর মধ্যে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান তাই ক্যাপসিকামের উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

আমাদের দৈনন্দিন রান্নাতে খুব বেশি আমরা ক্যাপসিকাম ব্যবহার করে থাকি না, যদিও বা সামান্য পরিমাণ ব্যবহার করে থাকি শুধুমাত্র তার সুগন্ধের জন্য। তবে আমাদের শরীরের জন্য ক্যাপসিকামের উপকারিতা সম্পর্কে জানার পর আমাদের এই চিন্তা ভাবনা পাল্টে যাবে। তাই আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় ক্যাসিকামের উপকারিতা সম্পর্কে। 

 

ক্যাপসিকামের উপকারিতা কি কি ?

১০০ গ্রাম ক্যাপসিকামের পুষ্টিগত গুনাগুন বা নিউট্রেশন ফ্যাক্ট :

  • ক্যালোরি ৪০
  • ফ্যাট ০.২ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট ৯.৪৬ গ্রাম
  • প্রোটিন ২ গ্রাম

 

ক্যাপসিকামে কি কি ভিটামিন আছে ?

সবুজ ক্যাপসিকামে আছে কিছু ভিটামিন এবং মিনারেল যেরকম,

  • ভিটামিন C
  • ভিটামিন B৬
  • ভিটামিন A
  • ভিটামিন K
  • আয়রন
  • ম্যাগনেশিয়াম
  • পটাসিয়াম
  • ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।

  

আছে কিছু ফাইটোকেমিক্যাল ( Phytochemicals ) যেরকম,

  •  অন্থসাইয়ানিন 
  • ফ্লাবনইড 
  • ফেনোলিক অ্যাসিড

ক্যারটিনয়েড যেরকম লুটেইন, লাইকোপেন, জিয়াজান্থিন। 

 

  • সবুজ ক্যাপসিকামের উপকারিতা আমাদের চোখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  তার কারণ ক্যাপসিকাম এর মধ্যে পাওয়া যায় লুটেইন এবং জিয়াজান্থিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা ক্যারটিনয়েড এর অংশ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গুলি আমাদের চোখের রেটিনা কে বিভিন্ন উজ্জ্বল আলোক রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে এবং আমাদের দৃষ্টি শক্তিকে অনেক উন্নত করে। 
  • আমাদের রক্তে আয়রনের পরিমাণ কম হলে অ্যানিমিয়া হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন C এবং আয়রন পাওয়া যায়। ভিটামিন C সাহায্য করে আমাদের রক্তে আয়রন এর শোষণ ক্রিয়াকে বৃদ্ধি করতে। যার ফলে আমাদের রক্তে আয়রনের অভাব দেখা দেয় না। আমাদের অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। আমাদের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। 
  • ক্যাপসিকামে এর মধ্যে পাওয়া যায় অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন B৬ এবং ম্যাগনেসিয়াম। এই ভিটামিন B৬ এবং ম্যাগনেসিয়াম সাহায্য করে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় ভাবে কাজ করতে। যা সাহায্য করে আমাদের অত্যাধিক মানসিক দুশ্চিন্তা এবং উদ্বিগ্নতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে। 
  • ক্যাপসিকাম এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে যেরকম লাইকোপেন এবং ফাইটোকেমিক্যাল। যা সাহায্য করে আমাদের শরীরে LDL ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা কে কম করতে এবং গুড কোস্টরলের মাত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। শুধু তাই নয় ক্যাপসিকাম এর মধ্যে পাওয়া যায় ক্যাপসাইসিনয়েড যা  সাহায্য করে আমাদের রক্তের চাপকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে। যার ফলে আমাদের হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তাই ক্যাপসিকামের উপকারিতা হৃদয়ের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
  •  ক্যাপসিকাম এর মধ্যে পাওয়া যায় লুটেইন এবং লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা ক্যারটিনয়েড এর অংশ। এছাড়াও থাকে কিছু ফাইটো-কেমিক্যাল যে গুলি আমাদের শরীরের ক্যান্সার সেল অথবা অ্যাবনর্মাল কোষের ক্রমাগত বৃদ্ধিকে কম করতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা কে অনেক কম করে। 
  • ক্যাপসিকামের উপকারিতা আমাদের ব্যথা এবং যন্ত্রণার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ক্যাপসিকামের মধ্যে পাওয়া যায় ক্যাপসাইসিন নামক একপ্রকার উপাদান। এই ক্যাপসাইসিন সাহায্য করে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা এবং যন্ত্রণাকে কম করতে। তাই নিয়মিত ক্যাপসিকাম গ্রহণ করলে বা খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন অংশে ব্যথা বা যন্ত্রণা হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়। 
  • ক্যাপসিকাম এর মধ্যে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন C এবং প্লান্ট কেমিক্যাল। এই ভিটামিন C এবং প্লান্ট কেমিক্যাল সাহায্য করে আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে লড়তে এবং আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম অথবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে। 
  • ক্যাপসিকামের উপকারিতা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কিত রোগের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ক্যাপসিকামের মধ্যে কিছু ফাইটোকেমিক্যাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যেরকম ক্যাপসাইসিন পাওয়া যায়। যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কিত ইনফেকশন অথবা সংক্রমণের সাথে লড়তে সাহায্য করে।
  • ক্যালসিয়ামের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার পাওয়া যায়। এই ফাইবার বা শর্করা সাহায্য করে আমাদের রক্তের ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা কে বৃদ্ধি করতে যার ফলে আমাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং আমাদের ব্লাড সুগার হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়।

 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : টমেটোর উপকারিতা সম্পর্কে এখনই জেনে নিন ৭ টি তথ্য

ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম বা কিভাবে রাখবো?

বাজার থেকে নিয়ে আসার পর ভালো করে জলে ধুয়ে কিছুটা সময় আলো এবং বাতাসে রেখে শুকিয়ে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে পারি। আসলে এখনকার দিনে সব সবজি চাষে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয় তাই ভাল করে জলে ধুয়ে রান্নাতে ব্যাবহার করতে হবে।

 

ক্যাপসিকামের অপকারিতা?

যদি আপনার অ্যালার্জি থাকে ক্যাপসিকামে তাহলে চুলকানি বা ত্বক সম্পর্কিত নানান ধরনের অসুবিধে হতে পারে, চোখ জ্বালা করতে পরে, গলাতে অসুবিধা হতে পারে তাই ক্যাপসিকাম এর অপকারিতা থাকতে পারে কিন্তু সাধারণত ক্যাপসিকাম খাওয়া বা গ্রহন করা নিরাপদ।

 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : পেঁপের উপকারিতা বিষয়ে অবাক করা ৯ টি তথ্য

 

 


Share With Your Friends

Leave a Comment