দই এর মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন B৬ এবং গুড ব্যাকটেরিয়া তাই দই খাওয়ার উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দুধ কে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সন্ধান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দই তে রূপান্তর করা হয়। এই প্রক্রিয়াতে দই এর মধ্যে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং গুড ব্যাকটেরিয়া।
দই এর পুষ্টিগত গুনাগুন বা নিউট্রিশন ভ্যালু অনেক বেশি, তাই অনেকে দই কে সুপার ফুড বলে থাকে। আমরা নিয়মিত দই কে বিভিন্ন উপায়ে গ্রহণ করি বা খেয়ে থাকি কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখা খুবই প্রয়োজন, তাই আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় দই খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে।
দই খাওয়ার উপকারিতা :
২০০ গ্রাম দই এর নিউট্রিশনাল ফ্যাক্ট বা পুষ্টির মান :
- ৯৮% ক্যালোরি
- ফ্যাট ৮.৬ গ্রাম (স্যাচুরেটেড ফ্যাট ৩.৪ গ্রাম)
- কার্বোহাইড্রেট ৬.৮ গ্রাম
- প্রোটিন ২২ গ্রাম
এছাড়াও আছে কিছু ভিটামিন ও মিনারেল যেরকম,
- ভিটামিন A
- ভিটামিন C
- ভিটামিন B
- ক্যালসিয়াম
- সোডিয়াম
- পটাশিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- আয়রন
আর আছে কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া যেরকম,
- ল্যাকটোবেসিলাস অ্যাসিডোফিলাস
- ল্যাকটোকক্কাস লাকটিস
- ল্যাকটোকক্কাস ল্যাকটিস্ক্রিমরিয়াস
ন্যাচেরাল প্রোবায়োটিক :
আমাদের শরীরের নানান ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের কারণে আমাদের কে অ্যান্টি বায়োটিক ওষুধ খেতে হয় এবং তারফলে আমাদের রোগ ঠিক হয়ে যায় কিন্তু আমাদের শরীরে থাকা কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া ও মারা যায় ওই ঔষধে। তাই সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পর ডাক্তার আমাদের প্রোবায়োটিক বা দই খেতে বলে।
দইয়ের মধ্যে উপরে আলোচিত কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে যেগুলো আমাদের পাচনতন্ত্রের জন্য বিশেষ উপকারি তাই দই কে আমরা ন্যাচেরাল প্রোবায়োটিক(Natural Probiotic) বলে থাকি।
ভালো ব্যাকটেরিয়া যেরকম, ল্যাকটোবেসিলাস অ্যাসিডোফিলাস, ল্যাকটোকক্কাস লাকটিস, ল্যাকটোকক্কাস ল্যাকটিস্ক্রিমরিয়াস ইত্যাদি যতটা আমাদের পাচনতন্ত্রের জন্যে উপকারি ততোটাই ভালো আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে।
দই খাওয়ার অন্যান্য উপকারিতা :
- দইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। তাই নিয়মিত দুই খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয় এবং আমাদের হাড় অনেক বেশি উন্নত এবং দৃঢ় হয়। শুধু তাই নয় পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম সাহায্য করে আমাদের দাঁত কে অনেক বেশি শক্ত করতে এবং দাঁত ক্ষয় কম করতে। কিন্তু আমাদের জেনে রাখা উচিত সূর্যালোক থেকে আমরা ভিটামিন D3 পাই। ভিটামিন D3 ছাড়া আমাদের শরীর ক্যালসিয়ামকে শোষণ করতে পারে না।
- দইয়ের মধ্যে ভিটামিন E এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে যা আমাদের ত্বকের মৃত কোষের পরিমাণ কে কম করে এবং নতুন কোষ উৎপন্ন করতে সাহায্য করে। নিয়মিত দই গ্রহন করলে বা ত্বকের উপর ব্যবহার করলে আমাদের ত্বক অনেক উজ্জ্বল এবং পরিষ্কার হয় এবং কালো দাগ বা ব্রণ কম হয়। তাই দই খাওয়ার উপকারিতা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- দইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় অনেক বেশি পরিমাণে প্রোটিন। আমরা জানি প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের মাংস পেশী অনেক উন্নত হয়। অত্যাধিক পরিশ্রমের পরেও আমাদের শরীরের মাংস পেশী গুলি কে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। এছাড়াও প্রোটিন আমাদের চুল এবং ত্বক এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- দইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং প্রোবায়োটিক। প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম সাহায্য করে আমাদের শরীরের ফ্যাট বা চর্বিকে কম করতে এবং আমাদের ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। প্রোবায়োটিক অথবা গুড ব্যাকটেরিয়া সাহায্য করে আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বা হজম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে। যার ফলে আমাদের অত্যাধিক ওজন বেড়ে যাওয়া বা ওবেসিটি হবার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তাই পরোক্ষভাবে দই খাওয়ার উপকারিতা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খুবই উপকারী।
- প্রবায়োটিক সাহায্য করে আমাদের শারীরিক ব্যথা বা যন্ত্রণাকে কম করতে। শুধু তাই নয় প্রবায়োটিক আমাদের শরীর কে বিভিন্ন ভাইরাল ইনফেকশন অথবা ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণের সাথে লড়তে সাহায্য করে। দইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় প্রোবায়োটিক, সিলেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংক। এই উপাদান গুলি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেমকে অনেক উন্নত করতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত দই খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং আমাদের শরীরের HDL গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা আমাদের হৃদয়ের জন্য ভীষণ উপকারী। নিয়মিত দই খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তাই দই খাওয়ার উপকারিতা আমাদের হৃদয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : ক্যাপসিকামের উপকারিতা সম্পর্কে অবিশ্বাস্য ৯ টি তথ্য।
দই খাওয়ার অপকারিতা বা দই খেলে কি ক্ষতি হয় ?
ক্ষতিকারক কোনো প্রতিক্রিয়া দইয়ের নেই তবে খুব বেশি দই খাওয়া ঠিক না।
- খুব বেশি পরিমানে রাতে দই খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে।
- বেশি পরিমানে দই খেলে ঠান্ডা লাগতে পারে বা কফ্ হতে পরে।
- যাদের ফুসফসের সমস্যা বা অ্যাস্থমা আছে তাদের জন্য দই খুব একটা ভালো না।
- যে মানুষের ল্যাকটোস অ্যালার্জি আছে, তাদের জন্য দই খাওয়া বা গ্রহণ করা ক্ষতিকারক।
এছাড়াও যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে অবশ্যই একবার পরামর্শ নেয়া উচিত।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : বয়স ক্যালকুলেটর বা Age Calculator – Healthy Bangla.
কিভাবে দইকে রাখব বা দই খাওয়ার নিয়ম?
দোকান থেকে দই কিনে আনার পর ফ্রিজ বা শীতল জায়গাতে রেখে দিতে হবে আর চেষ্টা করতে হবে ৩ দিনের মধ্যে ব্যাবহার করে ফেলার।
যতটা সম্ভব আমরা চেষ্টা করব দুপুরে খাদ্য গ্রহণের পরে দই কে খেতে বা গ্রহণ করতে। সকালে খালি পেটে এবং অনেক রাত্রি বেলা দই খাওয়া বা গ্রহণ করা উচিত নয়।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : টমেটোর উপকারিতা সম্পর্কে এখনই জেনে নিন ৭ টি তথ্য।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 3 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal) and Dr Gautam Ghosh (B.H.M.S, M.D in Homoeopathy, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com