সত্যি কি গুড় চিনির থেকে ভালো? আদৌ কি গুড় খাওয়ার উপকারিতা শরীরের জন্য ভালো!

Share With Your Friends

গুড় খাওয়ার উপকারিতা

আমরা সবাই জানি আমাদের শরীরের জন্য কার্বোহাইড্রেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট। এই কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরে শক্তির অন্যতম একটি উৎস। চিনি এবং গুড় এই কার্বোহাইড্রেট এর অন্তর্ভুক্ত। 

তবে নিয়মিত চিনি খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের মধ্যে নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ করলে আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যার ফলাফল স্বরূপ আমাদের ব্লাড সুগার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

শুধু তাই নয়, চিনির মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালোরি থাকে। তাই অত্যাধিক চিনি যুক্ত খাবার গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে ক্যালোরির মাত্রা বৃদ্ধি পায় যার ফলে আমাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। 

আখের রস থেকে বিভিন্ন জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চিনি পাওয়া যায়। কিন্তু আখের রসকে ভালো করে ফুটিয়ে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নিয়ে গিয়ে গুড় তৈরি করা হয় তাই গুড় তৈরির প্রক্রিয়া চিনির থেকে অনেক বেশি সহজ এবং কম পরিমাণ রাসায়নিক পদার্থ যুক্ত। 

 

গুড় খাওয়ার উপকারিতা : 

অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার গুলির মতোই গুড় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য আমাদের শরীরের জন্য। গুড়ের পুষ্টিগত গুনাগুন বা নিউট্রিশনাল ফ্যাক্ট চিনির থেকে অনেক বেশি। তাই খাদ্য হিসেবে গুড় চিনি থেকে অনেক বেশি উপকারী।

 

গুড়ের পুষ্টিগত গুনাগুন : 

১০০ গ্রাম গুড়ের মধ্যে পাওয়া যায়,

  • ক্যালোরি ৩৮২, 
  • প্রোটিন ০.৪ গ্রাম, 
  • ফ্যাট ০.১ গ্রাম, 
  • আয়রন ১১ মিলিগ্রাম, 
  • ম্যাগনেসিয়াম ৮০ মিলিগ্রাম, 
  • পটাশিয়াম ১ – ১.১ গ্রাম, 

 

  • গ্রীষ্মকালে কঠোর পরিশ্রমের পর আমাদের শরীরের শক্তির মাত্রা বা এনার্জি লেভেল অনেক কমে যায় তাই ওই সময় গুড়ের সাথে একটু জল মিশিয়ে খেলে আমাদের এনার্জি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। গ্রীষ্মকালে গুড় জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পানীয়। 
  • গুড়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ সুক্রোজ পাওয়া যায়, যা আমাদের পেটের মধ্যে থাকা গুড ব্যাকটেরিয়াগুলিকে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই নিয়মিত গুড় খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের হজম ক্ষমতা অনেক উন্নত হয় এবং কনস্টিপেশন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। শুধু তাই নয় গুড় খাওয়ার উপকারিতা আমাদের যকৃতের জন্য খুবই ভালো যদিও এ বিষয়ে আরো তথ্যের প্রয়োজন। 
  • নিয়মিত গুড় খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে আয়রনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে যার ফলে আমাদের শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদনে কোন সমস্যা হয় না এবং আমাদের শরীরে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। 
  • গুড়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এবং কিছু মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট যেরকম জিংক, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি পাওয়া যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সাহায্য করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে উন্নত করতে। 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : পান পাতার উপকারিতা সম্পর্কে অবিশ্বাস্য ৯ টি তথ্য

 

গুড় অথবা চিনি : 

বিশেষ করে বাচ্চাদের খাবারের মধ্যে একটু মিষ্টি ভাব না থাকলে, তারা খাদ্য গ্রহণ করতে চায় না। তাই চিনির বদলে আমরা গুড় ব্যবহার করতে পারি। 

শুধু তাই নয় যে যে খাবার গুলিতে আমার চিনি ব্যবহার করি, খাবার সুস্বাদু করার জন্য, সেই খাওয়ার গুলিতে চিনির বদলে আমরা গুড় ব্যবহার করতে পারি। 

গ্রীষ্মকালের অতিরিক্ত গরমের সময় আমরা গুড় জলের সাথে মিশে গ্রহণ করতে পারি। তাই গুড় চিনি থেকে অনেকাংশে এগিয়ে এবং খাওয়ার উপযোগ্য। 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : কলমি শাকের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে ৯ টি বিস্ময়কর তথ্য

 

অতিরিক্ত গুড় খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : 

অতিরিক্ত গুড় খেলে আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে যা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। প্রতিদিন অতিরিক্ত মাত্রায় গুড় খেলে আমাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস এবং হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। 

অতিরিক্ত গুড় খেলে আমাদের বমি ভাব এবং বদ হজমের সমস্যা হতে পারে। 

প্রতিদিন অতিরিক্ত গুড় খেলে আমাদের ওজন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে যা আমাদের শরীরের জন্য একদমই ভালো না। 

 

 


Share With Your Friends