মিষ্টি আলুর মধ্যে পাওয়া যায় অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন A, ভিটামিন C এবং পটাশিয়াম। শুধু তাই নয় মিষ্টি আলুতে থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান যা আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কে কম করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই মিষ্টি আলুর উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বপ্রথম এই মিষ্টি আলু দক্ষিণ এবং মধ্য আমেরিকাতে পাওয়া যায় এবং পরবর্তীতে সারা বিশ্বে। পূর্বে এই মিষ্টি আলু কে মিষ্টি মূল ( sweet root ) বলা হত কিন্তু পরবর্তী কালে আলু নামে পরিচিত হয়েছিল।
মিষ্টি আলু বিভিন্ন রকম রঙের হয় যেরকম লাল, হলদে, গোলাপী, এছাড়া আরও অনেক কিন্তু আমরা সাধারনত যেটা খেয়ে থাকি সেটা লাল অথবা গোলাপী রঙের। রং এর উপর ভিত্তি করে এদের নিউট্রেশন ফ্যাক্ট বা পুষ্টিগত গুনাগুনের বিশেষ পার্থক্য হয় না।
মিষ্টি আলুর উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি তাই মিষ্টি আলু সম্পর্কে আমাদের অবগত হওয়া অথবা আলোচনা করা খুবই প্রয়োজন।
মিষ্টি আলুর উপকারিতা :
১০০ গ্রাম মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুন বা নিউট্রেশনাল ফ্যাক্ট,
- মিষ্টি আলুর ক্যালোরি ৪২
- প্রোটিন ২.৪৯ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট ৮.৮২ গ্রাম (ফাইবার ৫.৩ গ্রাম )
- ফ্যাট ০.৫১ গ্রাম
মিষ্টি আলু এর মধ্যে কি কি ভিটামিন এবং মিনারেল আছে?
- ভিটামিন A
- ভিটামিন C
- ভিটামিন B৬
- ভিটামিন B১২
- ভিটামিন K
- সোডিয়াম
- পটাশিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- ক্যালসিয়াম
- আয়রন
- জিংক
- ফসফরাস ইত্যাদি।
এছাড়াও আছে ৮৬.৮ গ্রাম জল।
- মিষ্টি আলুর উপকারিতা আমাদের চোখ এবং দৃষ্টি শক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণ মিষ্টি আলুতে পাওয়া যায় বেটা-ক্যারোটিন। এই বেটা-ক্যারোটিন পরবর্তী সময় আমাদের শরীরের ভিটামিন A তে রূপান্তর হয়। ভিটামিন A সাহায্য করে আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করতে এবং উজ্জ্বল নীলাভ আলোকরশ্মি থেকে আমাদের চোখকে রক্ষা করতে।
- মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে এবং এই ফাইবার কে আমরা দুই ভাগে ভাগ করে থাকি, ১.সলিউবেল ফাইবার বা দ্রাব্য শর্করা, ২. ইনসলিউবেল ফাইবার বা অদ্রাব্য শর্করা। এই ফাইবার সাহায্য করে আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বা পাচনতন্ত্রকে উন্নত করতে। এছাড়া আমাদের পেটের মধ্যে থাকা গুড ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কস্টিপেশনের সমস্যা হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়।
- ক্যান্সার প্রতিরোধে মিষ্টি আলুর উপকারিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেরকম, মিষ্টি আলুর মধ্যে পাওয়া যায় বেটা-ক্যারোটিন এবং অ্যান্থসায়ানিন নামক দুইটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। বেটা-ক্যারোটিন কে প্রো-ভিটামিন বলা হয় কারণ আমাদের শরীর পরবর্তীকালে এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্টকে ভিটামিন A তে রূপান্তর করতে পারে, সাহায্য করে আমাদের শরীরের ফ্রি-রেডিক্যাল কে কম করতে। যার ফলে আমাদের শরীরের কোষ গুলি ফ্রি-রেডিক্যাল দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। অ্যান্থসায়ানিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাহায্য করে আমাদের শরীরের ক্যান্সার কোষ কে কম করতে অথবা নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তাই নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
- মিষ্টি আলুতে পাওয়া যায় অনেক বেশি পরিমাণ বেটা-ক্যারোটিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা পরবর্তী সময় আমাদের শরীরে ভিটামিন A তে রূপান্তর হয়। ভিটামিন A আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সম্পর্কিত ইনফেকশন বা সংক্রমনের সাথে লড়তে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের পেটের মধ্যে অবস্থিত গুড ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার ফলস্বরূপ আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেম অনেক উন্নত হয়। তাই মিষ্টি আলুর উপকারিতা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অপরীসীম।
- মিষ্টি আলুর মধ্যে অ্যান্থসায়ানিন নামক একপ্রকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায়। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাহায্য করে আমাদের মস্তিষ্কে ফ্রি-রেডিক্যাল দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে পুনরায় সুস্থ এবং কার্যকরী করতে। এছাড়াও অ্যান্থসায়ানিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাহায্য করে আমাদের স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করতে। তাই নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা অনেক উন্নত হয়।
- মিষ্টি আলুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার বা শর্করা পাওয়া যায়। এই ফাইবার সাহায্য করে আমাদের রক্তে অবস্থিত ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করতে। যার ফলে আমাদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম হয়। শুধু তাই নয় বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে যারা পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার প্রতিদিন গ্রহণ করেন তাদের টাইপ-টু-ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম হয়।
- মিষ্টি আলুতে থাকে ফাইবার এবং পটাশিয়াম। এই ফাইবার সাহায্য করে আমাদের রক্তে LDL ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা কে কম করতে। আবার পটাশিয়াম সাহায্য করে আমাদের শরীরে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তাই নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের হৃদয় সম্পর্কিত রোগ বা সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা সম্পর্কে ৮ টি সঠিক তথ্য।
মিষ্টি আলু খাওয়ার অপকারিতা কি?
আমরা যদি অল্প পরিমাণ মিষ্টি আলু মাঝে মধ্যে রান্নাতে খাই তাহলে এর কোন অপকারিতা নেই।
- কিন্তু মিষ্টি আলুতে অনেক বেশি পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে তাই যখন আমরা মিষ্টি আলু কে খুব বেশি সেদ্ধ করি বা খুব বেশি ভেজে ফেলি তখন সেই আলুর মধ্যে গ্লাইসিমিক ইনডেক্স বেড়ে যায় যার ফলে আমাদের শরীরে ব্লাড সুগার হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
- এছাড়া কিছু মানুষের মিষ্টি আলু খাওয়ার পর অ্যালার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই মিষ্টি আলু গ্রহনের পূর্বে অবশ্যই একবার আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়া উচিত।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : বয়স ক্যালকুলেটর বা Age Calculator – Healthy Bangla.
মিষ্টি আলু খাওয়ার নিয়ম বা কিভাবে রাখব?
বাজার থেকে কিনে এনে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দেবো এবং প্রয়োজনে রান্না করে খাব। আমরা মিষ্টি আলু কে বিভিন্ন সবজিতে ব্যবহার করে রান্না করতে পারি অথবা সরাসরি খেয়ে নিতে পারি।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : দই খাওয়ার উপকারিতা বিষয়ে ৭ টি অজানা তথ্য।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 3 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal) and Dr Gautam Ghosh (B.H.M.S, M.D in Homoeopathy, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com