শশার মধ্যে ৯৫ শতাংশ জল পাওয়া যায় এছাড়াও পাওয়া যায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং মিনারেল, যেরকম ভিটামিন B১, ভিটামিন সি, ভিটামিন K, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং কপার ইত্যাদি। নিয়মিত শশা খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের মধ্যে ডিহাইড্রেশন, কনস্টিপেশন, হাই-ব্লাড-সুগার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায় এছাড়াও শশা সাহায্য করে আমাদের শরীরের ওজনকে কম করতে। তাই শশা খাওয়ার উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা শশাকে বিভিন্নভাবে খেয়ে বা গ্রহণ করে থাকি যেরকম বিভিন্ন রকমের স্যালাডের সাথে এবং বিভিন্ন খাবারের সাথে ও মিশিয়ে খেয়ে থাকি। এমনকি পরিবারের যেকোনো অনুষ্ঠানে শশা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্যের তালিকায় থাকে।
শশা খুব সহজে বাজার বা মার্কেটে পাওয়া যায় এবং যার মূল্য খুবই কম। শশা দৈনন্দিন জীবনে আমাদের খাদ্য হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফল। আমরা নিয়মিত শশা খেয়ে থাকি কিন্তু শশা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অবগত হওয়া খুবই প্রয়োজন। তাই আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় শশা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
শশা খাওয়ার উপকারিতা কি ?
১০০ গ্রাম শশার পুষ্টিগত গুণাগুণ বা নিউট্রেশনাল ফ্যাক্ট,
- ক্যালোরি ১০
- প্রোটিন ০.৫৯ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট ২.১৬ গ্রাম (ডায়েটারি ফাইবার ০.৭ গ্রাম)
- সুগার ১.৩৮ গ্রাম
এছাড়াও আছে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল যেরকম,
- ভিটামিন A
- ভিটামিন B৬
- ভিটামিন C
- ভিটামিন K
- ক্যালসিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- ফসফরাস
- পটাশিয়াম
- সোডিয়াম
- আয়রন
- জিঙ্ক
- কপার ইত্যাদি।
- গ্রীষ্মকালে আমাদের শরীর থেকে খুব সহজে রেচনের মাধ্যমে জল নিঃসরণ হতে থাকে এর ফলে আমাদের শরীরে জলের অভাব বা ডিহাইড্রেশন হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। শুধু তাই নয় আমাদের রেচনের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ মিনারেলস বা খনিজ পদার্থ নিঃসরণ হয়ে যায় এবং তার ফলে আমাদের শরীরে এনার্জি বা শক্তির ও অনেক ক্ষয় হয়। তাই আমরা যদি নিয়মিত শশা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শরীরে ডিহাইড্রেশন বা জলের অভাব হয় না তার কারণ, শশাতে ৯৫ % জল থাকে এবং সাথে থাকে কিছু মিনারেলস বা খনিজ পদার্থ যা আমাদের পুনরায় শক্তির সঞ্চার ঘটায়।
- যদি আমাদের শরীরে জলের অভাব বা ডিহাইড্রেশন হয় তাহলে আমাদের খাদ্য পচনে সমস্যা হয়। তার ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা কন্সটিপেশনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমরা যদি নিয়মিত শশা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শরীরে জলের অভাব হয় না, শুধু তাই নয় শশাতে থাকে সলিউবেল ফাইবার যা আমাদের খাদ্য পচনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে, এবং আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আমাদের শরীরে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন হবার প্রবণতা কমে যায়।
- শশাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার থাকে। এই জাতীয় উপাদানগুলি আমাদের শরীরের রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকলে আমাদের হৃদয় ঘটিত রোগ কম হয় যেরকম, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক ইত্যাদি। শশা খাওয়ার উপকারিতা আমাদের রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসারের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং নিয়মিত শশা গ্রহণ করলে আমাদের হৃদয় ঘটিত রোগ কম হয়।
- শশা খেলে ওজন কমে তার কারণ, শশাতে ৯৫ % জল থাকে এবং ক্যালোরিও থাকে ১০০ গ্রাম এর মধ্যে ওই ১০ গ্রামের মত, তাই বহু পরীক্ষায় এটা প্রমাণিত যেসব সবজিতে জলের পরিমাণ বেশি এবং ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম সেই জাতীয় সবজি গ্রহণ করলে ওয়েট বা ওজন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি তাই ওজন কমাতে শশা খাওয়ার উপকারিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- আমাদের শরীরে যদি ফ্রি-রেডিকেল বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় যেরকম ক্যান্সার এবং নার্ভ ঘটিত বিভিন্ন রোগ। শশাতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যেগুলো আমাদের শরীর থেকে ফ্রি-রেডিকেলকে কমাতে অনেক সাহায্য করে। তাই নিয়মিত শশা গ্রহণ করলে আমাদের কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
- শশাতে প্রচুর পরিমাণ মিনারেলস থাকে যেরকম ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, সিলিকা। যেগুলি আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শশা ভালো করে পেশাই করে আমাদের ত্বকের উপর ব্যবহার করতে পারি ফলে আমাদের ত্বক পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল হয়। শুধু তাই নয় স্লাইস করা শশার টুকরো আমাদের চোখের উপর দিতে পারি এবং সেটি আমাদের চোখের জন্য খুবই আরামদায়ক।
- শশাতে প্রচুর পরিমাণ মিনারেল বা খনিজ পদার্থ থাকে যেরকম ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ইত্যাদি। ওই মিনারেল বা খনিজ পদার্থ গুলো আমাদের শরীরের হাড় কে শক্ত এবং দৃঢ় করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। শুধু তাই নয় শশাতে কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানও রয়েছে যেগুলি আমাদের হাঁটুতে, কোমরে বা হাতের ব্যথাকে কম করতে অনেক সাহায্য করে।
- শশা এবং পুদিনা পাতা ভালো করে পেশাই করে জুস তৈরি করা যায় এবং সেই জুস আমরা গ্রহণ বা পান করলে আমাদের শরীরে ডিটক্সিফিকেশন হয় অথবা আমাদের শরীর থেকে টক্সিনস বা ক্ষতিকারক পদার্থগুলো রেচনের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে ১০ টি বিস্ময়কর তথ্য।
শশা খাওয়ার নিয়ম এবং শশা খাওয়ার সঠিক সময় কি ?
- আমরা শশা দুপুর বেলা খাবারের আধঘন্টা পূর্বে অথবা রাতে খাবারের আধঘন্টা পূর্বে খেতে বা গ্রহণ করতে পারি।
- শশা খালি পেটে খাওয়া ভালো নয় তার কারণ খালি পেটে শশা হজম করা খুব কঠিন।
- আবার রাতে খাওয়ার বা ডিনারের পর শশা খেলে বা গ্রহণ করলে ঘুম আসতে চায় না বা অনিদ্রার সমস্যা হয়।
ওজন কমাতে শশা খাওয়ার নিয়ম কি ?
আমরা দুপুরে বা রাতে খাওয়ারের আধঘন্টা পূর্বে যদি শশা খেয়ে নিই তাহলে আমাদের খিদে কমে যায়। শশা তে ৯৫ % জল থাকে এবং ক্যালোরি খুবই কম থাকে। ঠিক এইভাবে আমাদের শরীরে খাদ্যের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে আর অল্প অল্প করে আমাদের ওজন কমতে থাকে।
শশা খাওয়ার অপকারিতা কি ?
সাধারণত শশা খেলে বা গ্রহণ করলে খুব বেশি প্রতিক্রিয়া হয় না তবে কিছু মানুষের শশা খেলে অপকার হতে পারে। যেমন
- এরকম প্রচুর মানুষ দেখা গেছে যারা শশা খেলে বা গ্রহণ করলে তাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া ফলস্বরূপ অ্যালার্জি দেখা গেছে। তাই যে সমস্ত মানুষের শশা তে অ্যালার্জি হয় তাদের শশা একদমই খাওয়া উচিত না।
- শশাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন K থাকে তাই খুব বেশি শশা খাওয়া আমাদের জন্য একদমই ঠিক না। কারণ ভিটামিন K আমাদের শরীরের রক্ত কে জমাট করতে পারে।
- শশা কিনে এনে বেশ কিছুদিন বাইরে ফেলে রেখে, পরে ব্যবহার করলে বা খেলে আমাদের শরীর খারাপ হতে পারে। কারণ শশাতে খুব সহজে পচন ধরে এবং তার ফলে শশাতে কিছু ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস সৃষ্টি হয় যা আমাদের শরীরের জন্য একদমই ভালো না।
শশা কিভাবে রাখবো?
মার্কেট বা বাজার থেকে শশা কিনে এনে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড়ে মুছে নেব এবং তারপর আলো ছায়া জায়গায় ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে ফ্রিজের মধ্যে রেখে দেব।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অবাক করা ৯ টি তথ্য।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 3 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal) and Dr Gautam Ghosh (B.H.M.S, M.D in Homoeopathy, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com