চুলে নিয়মিত তেল ব্যবহার করলে কি হয় তা অনেকেরই সঠিকভাবে জানা নেই। অনেকের মধ্যেই এই অভ্যাস রয়েছে, বিশেষত মহিলাদের মধ্যে নিয়মিত চুলে তেল ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়। নিয়মিত চুলে তেল ব্যবহার করলে চুল সুন্দর ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল থাকে আর পাওয়া যায় নানা ধরনের উপকার। চলুন আমরা আজকে জেনে নেব চুলে কিভাবে তেল ব্যবহার করব এবং কতদিন অন্তর ব্যবহার করব?
চুলের তেল ব্যবহারে সঠিক নিয়মটা কি ?
তেল আমাদের চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আমরা যদি নিয়মিতভাবে চুলে তেল দি তাহলে আমাদের চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং চুলের বৃদ্ধিতে তা সাহায্য করে। তেল উষ্ণ গরম করে মাথার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করলে চুল থাকে স্বাস্থ্যজ্জল ও মজবুত। নিয়মিত চুলে তেল দিলে আমাদের স্কাল্প বা মাথার ত্বকে কোনরকম ইনফেকশন বা সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
কোকোনাট অয়েল বা নারিকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল ইত্যাদি বিভিন্ন তেল ব্যবহার করার আগে হালকা গরম করে লাগালে তা সহজেই আমাদের মাথার স্ক্যাল্পে প্রবেশ করে।
পরিমাণ মতো হালকা উষ্ণ তেল পাত্রের মধ্যে নিয়ে আঙ্গুলের ডগা দিয়ে হালকা হালকা স্কেলপে লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর আঙুলের চাপ দিয়ে পুরো মাথায় ভালো করে মালিশ করে নিতে হবে।
এরপর আধঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ভালো করে চুল ধুয়ে নিতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাতে চুলের গোড়া থেকে তেল পরিষ্কার হয়।
নিয়মিত তেল ব্যবহারে কি কি উপকার পাওয়া যাবে?
- নিয়মিত চুলে তেল ব্যবহার করলে মাথা ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, চুলের ফলিকলগুলোকে শক্তিশালী করে।
- চুল ও মাথার ত্বককে মশ্চারাইজ করে। চুল পড়া অনেকাংশে কম করে।
- মাথার ত্বককে শুষ্ক হওয়ার থেকে রক্ষা করে এর ফলে আমাদের খুশকি হওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়।
- চুলের অকালপক্কতা রোধ করে।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : খুশকি হওয়ার কারণ সম্পর্কে ৭ টি অজানা তথ্য
বিভিন্ন রকমের তেল যা ব্যবহারে মিলবে উপকার :
চুলের নানারকম সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন রকমের তেল যেমন পেঁয়াজ তেল, ক্যাস্টর অয়েল,কোকোনাট অয়েল বা নারকেল তেল, নিম তেল,রোজমেরী অয়েল, অর্গান অয়েল, অলিভ অয়েল, থাইম ওয়েল ইত্যাদি আমরা ব্যবহার করতে পারি।
পেঁয়াজ তেল :
চুল পড়া বন্ধ করার তেল হিসাবে পেঁয়াজ তেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই তেলের ব্যবহার আমাদের মাথার স্কাল্পকে অনেক সুস্থ রাখে। পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা আমাদের চুলের মধ্যে হওয়া নানা ধরনের সংক্রমনের হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে।
ক্যাস্টর অয়েল :
চুল পড়া বন্ধ করার তেল হিসেবে ক্যাস্টর অয়েলের ভূমিকা ভীষনভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ক্যাস্টর অয়েলের মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী। এই অয়েলের মধ্যে অ্যান্টিফাঙ্গল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান আছে যার ফলে মাথার স্কাল্পের মধ্যে হওয়া বিভিন্ন চুলকানি বা খুশকির হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে।
নারকেল তেল :
চুল পড়া বন্ধ করার তেল হিসেবে আরেকটি অন্যতম তেল হল নারকেল তেল। নারকেল তেলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই এবং ওমেগা ৩ যা চুলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
এই তেল চুলের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে চুলকে করে তোলে মসৃন। নিয়মিত এই তেল ব্যবহারের ফলে চুল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। মাথার ত্বকে হওয়া খুশকির হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে নারকেল তেল। খুশকি হবার ফলে মাথার ত্বক ভীষণভাবে শুষ্ক হয়ে যায়। নারকেল তেল সেই শুষ্ক ত্বককে হাইড্রেট করতে পারে।
নিম তেল:
নিম তেল চুল পড়া বন্ধ করতে ভীষণ ভাবে উপকারী। নিম তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, ফলে চুল তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : চুল পড়া বন্ধ করার তেল সম্পর্কে ৯ টি অজানা তথ্য
রোজমেরী অয়েল:
বিভিন্ন এসেন্সিয়াল অয়েল এর মধ্যে রোজমেরী অয়েল হলো এক অনবদ্য অয়েল। এই তেলের টেক্সচার ভীষণ হালকা হয়। এই তেল মাথায় নতুন চুল গজাতে যেমন সাহায্য করে। এই তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া শক্ত হয় যার ফলে চুল পড়া কমে যায়।
অর্গান অয়েল:
অর্গান অয়েলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।অর্গান অয়েল চুলের জন্য দারুন উপকারি। ফ্রিজি চুলের সমস্যা দূর করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
অলিভ অয়েল:
অলিভ অয়েল চুলের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি তেল। নিয়মিত অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে খুশকি এবং চুল পড়ার মতন নানা সমস্যা থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়া যায়। চুলকে নরম ও মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। চুলে সঠিক পুষ্টি বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।
থাইম অয়েল:
থাইম ওয়েল হল একটি এসেনশিয়াল ওয়েল। এই তেলের টেক্সচার ও ভীষণ হালকা। চুলের ফলিকল গুলোকে উদ্দীপ্ত করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। চুল পড়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
কতদিন অন্তর মাখবেন তেল?
চুল ভালো রাখতে প্রতি সপ্তাহে দু থেকে তিন দিন তেল লাগাতে হবে। চুলে তেল লাগিয়ে আধঘন্টা থেকে এক ঘন্টা অপেক্ষা করে তারপর ভালো করে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: উপরে উল্লেখিত তেল গুলি ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে একবার পরামর্শ করে নেবেন।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 5 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com