আমাদের মাথায় সামান্য পরিমাণ খুশকি হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয় কিন্তু যদি খুব বেশি পরিমাণ খুশকি আমাদের মাথায় হয় তাহলে তা চিন্তার বিষয় হতে পারে তাই আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় খুশকি হওয়ার কারণ গুলি সম্পর্কে।
আমাদের মাথার ত্বকের উপরের পাতলা আবরণ বা কোষগুলি মৃত হয়ে খোসার আকার ধারণ করে তাকে আমরা খুশকি বলে থাকি। খুব বেশি পরিমাণ খুশকি আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক, অতিরিক্ত খুশকির ফলে আমাদের ত্বকে বিভিন্ন প্রকার সংক্রমণ এবং ব্রুনো হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
শুধু তাই নয় অতিরিক্ত খুশকি আমাদের চুল উঠে যাওয়ার অন্যতম কারণ যা পরবর্তীকালে আমাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাই খুশকি কে নিয়ন্ত্রণ করা বা খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে অবগত হওয়া ও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মাথায় খুশকি হওয়ার কারণ কি ?
সামান্য পরিমাণ খুশকি প্রতিটা মানুষের হয়ে থাকে এবং এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক তবে অতিরিক্ত খুশকি যদি আমাদের মাথায় হয় তাহলে তার নির্দিষ্ট কিছু কারণ থাকে। আমাদের মাথায় বিভিন্ন কারণে অতিরিক্ত খুশকি হয়ে থাকে যেরকম,
শুষ্ক ত্বক :
শুষ্ক ত্বক বা ড্রাই স্কিন আমাদের মাথায় খুশকি হওয়ার অন্যতম কারণ। এই শুষ্ক ত্বক বা ড্রাই স্কিন সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে আমাদের আবহাওয়া এবং ত্বকের উপর। আমরা যদি নিয়মিত যথার্থ পরিমাণ জল পান না করি তাহলে আমাদের ত্বক শুষ্ক বা ড্রাই হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। শীতকালে আবহাওয়া খুবই শুষ্ক এবং ড্রাই হয় তাই শীতকালে আমাদের ত্বক বা স্কিন ও খুব শুষ্ক বা ড্রাই হয় তাই শীতকালে আমাদের খুশকি হওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়।
অ্যালার্জি :
বিভিন্ন খাদ্য অথবা বস্তুতে আমাদের অ্যালার্জি থাকতে পারে। এই অ্যালার্জি আমাদের মাথার ত্বক বা স্কিনের মধ্যে চুলকানি অথবা ফুলে যাওয়া অথবা শুষ্ক ভাব তৈরি করে এবং এর কারণে আমাদের খুশকি হবার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই অ্যালার্জি আমাদের মাথায় খুশকি হবার আরেকটি কারণ।
চুলের অযত্ন :
আমরা যদি আমাদের চুলকে প্রতিদিন পরিষ্কার এবং যত্ন না করি তাহলেও আমাদের খুশকি হবার প্রবণতা বেড়ে যায়। নিয়মিত আমাদের চুলে জৈব শ্যাম্পু এবং বিভিন্ন প্রকার তেলের ব্যবহার আমাদের খুশকি হওয়ার সম্ভাবনা কে কম করে।
এছাড়াও অন্যান্য বস্তু যেরকম পাতি লেবু, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, ডিম, পিয়াজের রস ইত্যাদি সঠিক ভাবে না ব্যবহার করি তাহলে আমাদের মাথার ত্বক বা স্কাল্প পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে না এবং আমাদের মাথার ত্বকে অবস্থিত ফলিকল গুলির কার্যকারিতা অনেক কমে যায়।
তাই আমাদের উচিত নিয়মিত চুলের পরিচর্যা করা যার ফলে আমাদের মাথায় খুশকি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
সূর্যের প্রখর তাপ :
আমরা যদি খুব বেশি সময় সূর্যের প্রখর তাপে কাজ করি বা দাঁড়িয়ে থাকি তাহলেও আমাদের খুশকি হবার প্রবণতা বেড়ে যায় তার কারণ সূর্যের প্রখর তাপ আমাদের স্কিন এবং স্কাল্পের আদ্রতা কে খুব বেশি কম করে দেয় ফলস্বরূপ আমাদের স্কাল্পে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
যার ফলে আমাদের মাথার ত্বকের উপরের কোষগুলি খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পরবর্তীকালে খুশকির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে ১১ টি বিস্ময়কর তথ্য।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ :
খুব বেশি ধুলোবালি বা ডাস্ট এবং অপরিষ্কার পরিবেশে কাজ করলে বা বেশি সময় থাকলে আমাদের স্কাল্পের ইনফেকশন বা সংক্রমণ হবার প্রবণতা বেড়ে যায় এবং আমাদের স্কাল্প খুবই শুষ্ক হয়ে ওঠে এবং আমাদের চুলকুনি, চুলের গোড়া নষ্ট হয়ে যাওয়া এবং খুশকি হবার প্রবণতা খুব বেড়ে যায়।
বিভিন্ন প্রকার সংক্রমণ :
ম্যালাসেজিয়া নামক এক ফাঙ্গাসের জন্য আমাদের খুশকি হয়। আমাদের চুল এবং ত্বক যদি আমরা নিয়মিত পরিষ্কার না করি তাহলে ওই ফাঙ্গাস আমাদের ত্বকের উপর বসবাস করে এবং সম্পূর্ণভাবে আমাদের উপর নির্ভর থাকে এবং আমাদের ত্বকের উপরের অংশ বা কোষগুলিকে ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে আমাদের খুশকি হয়।
বিভিন্ন রোগের কারণে :
আমাদের যদি কোন কঠিন রোগ হয়ে থাকে এবং তার নিরাময়ের জন্য আমরা যদি নিয়মিত ঔষধ বা মেডিসিন গ্রহণ করি তাহলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আমাদের ত্বকের উপরের অংশ শুষ্ক এবং অমসৃণ হতে থাকে এবং আমাদের খুশকি হওয়ার প্রবণতা ও বেড়ে যায়।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা।
খুশকি কম করার বা নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়:
কিছু সঠিক পথ অবলম্বনের মাধ্যমে বা সঠিক পদ্ধতিতে চুলের পরিচর্যা করে আমাদের মাথায় খুশকি হবার সম্ভাবনাকে কম করতে পারি যেরকম,
- নিয়মিত আমাদের চুলে নারকেল তেল ব্যবহার করা উচিত। তার কারণ নারকেল তেলের মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান থাকে যা আমাদের মাথায় খুশকি হওয়ার সম্ভাবনাকে কম করে।
- প্রতি সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ১ থেকে ২ দিন চুলে অলিভ অয়েল এবং অনিয়ন অয়েল ব্যবহার করা উচিত। এই তেল গুলির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়ার উপাদান আমাদের মাথায় খুশকি হওয়ার প্রবণতাকে কম করে।
- নিয়মিত আমাদের চুলে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা উচিত, অথবা অ্যালোভেরা যুক্ত শ্যাম্পু বা তেল ব্যবহার করা উচিত। যার অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান আমাদের মাথার খুশকি কে কম করতে সাহায্য করে।
- প্রতি দুই সপ্তাহ অন্তর একবার করে পাতিলেবুর রস সরাসরি আমাদের মাথার চুলে ব্যবহার করতে পারি, পাতি লেবুর মধ্যে কিছু জৈব অ্যাসিড পাওয়া যায়। যা আমাদের মাথায় অবস্থিত পরজীবী গুলিকে অনেক কম করতে সাহায্য করে যার ফলে আমাদের মাথায় খুশকি কম হয়।
- প্রতি ১৫ দিন অন্তর নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারি। নিম পাতার মধ্যে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে যা আমাদের মাথার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
- প্রতিমাসে এক একবার গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারি। গ্রিন টি সাহায্য করে আমাদের মাথার ত্বককে পরিষ্কার রাখতে এবং মাথার ত্বকে বিভিন্ন সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনাকে কম করতে।
- খুশকি কম করার জন্য আমরা আপেল সিডার ভিনেগার এবং বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারি, তবে সেক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপেল সিডার ভিনেগার এবং বেকিং সোডা খুব বেশি সময়ের জন্য আমাদের চুলের ব্যবহার করা ঠিক নয়। যার সামান্য পরিমাণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : আমরা চেষ্টা করেছি খুশকি হওয়ার কারণগুলি সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে, তবে এছাড়াও খুশকি হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তাই খুব বেশি খুশকি হলে অবশ্যই একবার আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 3 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal) and Dr Gautam Ghosh (B.H.M.S, M.D in Homoeopathy, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com