খেজুরের মধ্যে পাওয়া যায় অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা সাহায্য করে আমাদের শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে। তাই খেজুরের উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
খেজুর খুবই সুস্বাদু একটি ফল যা বহু যুগ ধরে আমরা খেয়ে চলেছি বা আপনি বলতেই পারেন পৌরাণিক যুগের ফলগুলির মধ্যে খেজুর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল।
সব থেকে বেশি পরিমাণ খেজুর উৎপন্ন হয় মিশর বা ইজিপ্ট দেশে যা মিডিল ইস্ট এর একটি অংশ। যদিও খেজুরের চাহিদার উপর নির্ভর করে এখন সারাবিশ্বে খুব সহজে খেজুর পাওয়া যায়।
খেজুরের উপকারিতা :
১০০ গ্রাম খেজুরের পুষ্টিগত গুনাগুন বা নিউট্রেশনাল ফ্যাক্ট :
- ক্যালোরি ২৭৭
- প্রোটিন ১.৪১ গ্রাম
- টোটাল ফ্যাট ০.১৫ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট ৭৫ গ্রাম ( ফাইবার ৬.৭ গ্রাম )
এছাড়াও থাকে অনেক ভিটামিন এবং মিনারেল যেরকম,
- ভিটামিন A
- ভিটামিন B৬
- ভিটামিন E
- ভিটামিন K
- ক্যালসিয়াম
- আয়রন
- পটাশিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি।
- খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার পাওয়া যায়। প্রতিদিন এই ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বা পাচনতন্ত্র অনেক উন্নত হয়। যার ফলে আমাদের খাদ্য খুব সহজে হজম হয় এবং আমাদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন এর সমস্যা হবার সম্ভবনা অনেক কমে যায়। শুধু তাই নয় নিয়মিত খেজুর খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের গ্যাস এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা অনেক কমে যায়।
- খেজুরের উপকারিতা আমাদের মস্তিষ্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের শরীরে যদি কোন কারনে ফ্রী-র্যাডিকেল বেড়ে যায় তার ফলে আমাদের মধ্যে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীকালে এই অক্সিডেটিভ-স্ট্রেস এর কারণে আমাদের শরীর তথা মস্তিষ্ক খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার কারণ অক্সিডেটিভ স্ট্রেস আমাদের মস্তিষ্কে সেল বা কোষ গুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যার ফলে আমাদের মধ্যে ভুলে যাওয়া বা মেমোরি লস এর সমস্যা দেখা দেয়, যাকে আলঝেইমার রোগ বলে। খেজুরের মধ্যে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ক্যারোটিনয়েড নামক দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরে ফ্রী-র্যাডিকেল এবং অক্সিডেটিভ- স্ট্রেসকে কম করতে সাহায্য করে। যার ফলে আমাদের মধ্যে আলঝেইমার রোগ হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়।
- খেজুরের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়। এই ফাইবার সাহায্য করে আমাদের রক্তে ইনসুলিন এর সংবেদনশীলতা কে বৃদ্ধি করতে। যার ফলে আমাদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই নিয়মিত খেজুর খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের ব্লাড সুগার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। শুধু তাই নয় অনেকের ধারণা খেজুর খেলে ব্লাড সুগার বৃদ্ধি পায় তবে তথ্যটি একদম ভুল কারণ খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম।
- পলিফেনল এক প্রকার মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট যা প্রচুর পরিমাণে খেজুরের মধ্যে পাওয়া যায়। এই পলিফেনল সাহায্য করে আমাদের রক্তে গুড কোলেস্টেরল (HDL) এর মাত্রা কে বৃদ্ধি করতে এবং ব্যাড কোলেস্টেরল (LDL) এর মাত্রা কে কম করতে। আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তাই খেজুরের উপকারিতা আমাদের হৃদয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- খেজুরের মধ্যে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমান মিনারেল যেরকম ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। ওই খনিজ উপাদান গুলি সাহায্য করে আমাদের শরীরের হাড় কে শক্ত এবং উন্নত করতে। তাই নিয়মিত খেজুর খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের হাড় এবং শারীরিক গঠন অনেক উন্নত হয়।
- খেজুরের মধ্যে ভিটামিন A, ভিটামিন D এবং ভিটামিন E পাওয়া যায়। যা আমাদের চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয় খেজুরের মধ্যে পাওয়া যায় ক্যারোটিনয়েড নামক এক একপ্রকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। যা সাহায্য করে আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি কে উন্নত করতে। তাই আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য খেজুরের উপকারিতা অপরিসীম।
- খেজুরের মধ্যে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ফেনোলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান গুলি সাহায্য করে আমাদের শরীরে ফ্রি-র্যাডিকেল কম করতে। যার ফলে আমাদের শরীরের কোষগুলি ফ্রি-র্যাডিকেল দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। শুধু তাই নয় এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান গুলি সাহায্য করে আমাদের শরীরে ক্যান্সার সেল বা কোষ গুলির ক্রমাগত বৃদ্ধি কম করতে। তাই নিয়মিত খেজুর খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়।
- খেজুর পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করে আমাদের শরীরে অক্সিটোসিন হরমোন কে বৃদ্ধি করতে। এই অক্সিটোসিন হরমোন সাহায্য করে আমাদের প্রজনন ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে। শুধু তাই নয় একটি শিশুকে জন্ম দেওয়ার সময় গর্ভবতী মা কে যে পরিমাণ সংকোচন হতে হয় তার জন্য অক্সিটোসিন হরমোন এর ভূমিকা অসামান্য। তাই গর্ভবতী অবস্থায় খেজুর খাওয়ার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : মিষ্টি আলুর উপকারিতা বিষয়ে বিস্ময়কর ৭ টি তথ্য।
খেজুর খাওয়ার নিয়ম বা খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় ?
আমাদের বুঝতে হবে খেজুর এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে তাই বিশেষ কিছু সময় খেজুর খেলে আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো বা উপকারী যেরকম,
- যেহেতু সকালে আমাদের শরীরে প্রচুর খাদ্যের চাহিদা থাকে এবং সারাদিন কাজের জন্য আমাদের প্রচুর এনার্জির বা শক্তির প্রয়োজন হয় তাই যদি আমরা সকালে খেজুর খাই বা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শরীরে অনেক রকম খাদ্যের চাহিদা পূরণ হয় এবং আমাদের এনার্জির অভাব হয় না তাই সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি।
- যদি আমরা নিয়মিত স্বাস্থ্যচর্চা অথবা এক্সারসাইজ করি, তাহলে তার আধঘন্টা পূর্বে খেজুর খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীর এনার্জেটিক থাকে এবং আমাদের স্বাস্থ্যচর্চা করতে সুবিধা হয়।
- যদি আমরা রাতে ঘুমানোর পূর্বে খেজুর খাই বা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের খাদ্য পচনে বা ডাইজেস্টিভ সিস্টেম অনেক উন্নত হয় তার কারণ খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে যা আমাদের খাদ্য পচনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
খেজুর খাওয়ার অপকারিতা?
খেজুর আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল তবে খেজুর খাওয়ার অপকারিতা ও রয়েছে যেরকম,
- খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, তাই আমরা যদি খুব বেশি খেজুর খাই তবে আমাদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়তে পারে এবং খুব বেশি পটাশিয়াম আমাদের কিডনির জন্য একদমই ভালো না।
- খেজুরে বেশি পরিমাণ ফাইবার থাকে তাই আমরা যদি বেশি পরিমাণ খেজুর খাই বা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের সেটিকে ডাইজেস্ট বা হজম করতে না পারার কারণে আমাদের পেটে ব্যথার সম্ভাবনা রয়েছে।
- যদি আমাদের খেজুরে অ্যালার্জি থাকে তবে খেজুর খেলে আমাদের শরীরে নানান রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা সম্পর্কে ৮ টি সঠিক তথ্য।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি: খেজুর খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে একবার পরামর্শ করে নেবেন।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 3 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal) and Dr Gautam Ghosh (B.H.M.S, M.D in Homoeopathy, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com