দৈনিক দুপুর বেলা ১ টি করে এলাচ খেলে কি হয়? এলাচ খাওয়ার উপকারিতা

Share With Your Friends

এলাচ খাওয়ার উপকারিতা

এলাচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত এলাচ খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। এছাড়াও এলাচ খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশন বা সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম হয়। 

সাধারণত আমরা এলাচ কে রান্নায় ব্যবহার করি বিভিন্ন খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য। সব থেকে বেশি পরিমাণ এলাচ ভারতবর্ষের কেরালা, কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুতে পাওয়া যায়। আমরা নিয়মিত এলাচ আমাদের রান্নায় অথবা মুখ শুদ্ধির জন্য ব্যবহার করে চলেছি, কিন্তু নিয়মিত এলাচ খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অবগত হওয়া খুবই প্রয়োজন।

 

এলাচ খাওয়ার উপকারিতা : 

আমাদের শরীরের জন্য এলাচের পুষ্টিগত গুনাগুন এবং ঔষধি গুনাগুন অনেক বেশি। তাই নিয়মিত আমাদের খাদ্য প্রস্তুত করতে এলাচের ব্যবহার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ১০০ গ্রাম এলাচের পুষ্টিগত গুনাগুন বা নিউট্রিশন ফ্যাক্ট, 

  • ক্যালোরি ৩১১, 
  • কার্বোহাইড্রেট ৬৮ গ্রাম 
  • প্রোটিন ১০ গ্রাম
  • ফ্যাট  ৬.৬ গ্রাম

এছাড়াও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং মিনারেল যেরকম, 

ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি। 

  • এলাচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায়। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সাহায্য করে আমাদের শরীরের রক্তের চাপ কে নিয়ন্ত্রণ রাখতে। তাই নিয়মিত এলাচ খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে ফলস্বরূপ আমাদের হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। 
  • যদি আমাদের দীর্ঘদিন ধরে শরীরের বিভিন্ন অংশে যন্ত্রণা অথবা ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে নিয়মিত এলাচ খাওয়া বা গ্রহণ করা আমাদের জন্য বিশেষ উপকারী। কারণ এলাচের মধ্যে আন্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাওয়া যায়। যা আমাদের শরীরের কোষগুলিকে ক্ষতি হাত থেকে রক্ষা করে এবং ব্যথা বা যন্ত্রণা বৃদ্ধি পাবার প্রবণতাকে কম করে। 
  • এলাচের মধ্যে বিশেষ কিছু এনজাইম উপাদান পাওয়া যায়। এনজাইম সাহায্য করে আমাদের শরীরকে ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়তে। শুধু তাই নয় এলাচের মধ্যে কিছু ফাইট্রকেমিক্যাল পাওয়া যায় যা ক্যান্সার কোষের ক্রমাগত বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা কে অনেক কম করে। তাই নিয়মিত এলাচ খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অনেক কম হয়। 
  • আমাদের হজম ক্ষমতা কে উন্নত করার জন্য এলাচের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও এলাচের মধ্যে কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায় যা আমাদের পেটের মধ্যে গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগকে কম করতে সাহায্য করে।  তাই এলাচ আমাদের শরীরে অ্যান্টি-আলসার ঔষধ রূপে কাজ করে এবং নিয়মিত এলাচ গ্রহণ করা আমাদের শরীরের আলসার হবার সম্ভাবনাকে কম করে।
  • অনেক সময় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস দ্বারা আমাদের মুখে সংক্রমণ বা ইনফেকশন দেখা দেয় যেরকম, মাউথ আলসার, দাঁতের গোড়াতে ইনফেকশন, জিভে ইনফেকশন ইত্যাদি। এছাড়াও অনেক সময় আমাদের মুখে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের জন্য দুর্গন্ধ হয়ে থাকে। এলাচের মধ্যে কিছু অ্যান্টি-মাইক্রোবাল উপাদান পাওয়া যায়। এই অ্যান্টি-মাইক্রোবাল সাহায্য করে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের সাথে লড়তে। যার ফলে আমাদের মুখে বিভিন্ন সংক্রমণ বা ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। 
  • এলাচের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায়, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সাহায্য করে আমাদের শরীরে এল ডি এল(LDL) ব্যাড কোলেস্টরেলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তাই আমরা যদি নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ এলাচ খাই বা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শরীরে ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকে এবং গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : প্রতিদিন ডিম খাওয়া শরীরের জন্য ভালো? ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা

 

এলাচ খাওয়ার অপকারিতা : 

আমরা যদি দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ এলাচ খাই তাহলে আমাদের শারীরিকভাবে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। কিন্তু কোন কিছুই আমাদের শরীরের জন্য অতিরিক্ত ভালো না। 

  • এলাচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইটোকেমিক্যাল থাকে তাই অতিরিক্ত পরিমাণ এলাচ খেলে আমাদের পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে, ডায়রিয়া হবার সম্ভাবনা থাকে এবং বমি ভাব আসে।
  • অনেক মানুষের এলাচ খেলে অ্যালার্জি সম্ভাবনা থাকে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের দাগ দেখা দেয়।
  • গর্ভবতী মায়েদের এবং ছোট বাচ্চাদের অতিরিক্ত পরিমাণ এলাচ একদমই খাওয়া উচিত না। 

 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : প্রতিদিন রাতে ৯ টা করে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

বিশেষ দ্রষ্টব্য : আপনার যদি কোন দীর্ঘস্থায়ী রোগ হয়ে থাকে তাহলে এলাচ খাওয়ার পূর্বে আপনার ডাক্তারের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করে নেবেন। 

 


Share With Your Friends