কিসমিসের মধ্যে বেশি পরিমাণ সুগার এবং ক্যালোরি থাকে, এছাড়াও থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। তাই নিয়মিত কিসমিস খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণত আঙ্গুরকে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় শুকিয়ে সেখান থেকে কিসমিস প্রস্তুত করা হয়। শুধু তাই নয় সারা বিশ্বে কিসমিস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার, যা সহজলভ্য এবং মূল্য অনেক কম। কিন্তু প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ কিসমিস গ্রহণ করার পূর্বে আমাদের কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অবগত হওয়া খুবই প্রয়োজন।
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা :
সাধারণত কিসমিস তিন প্রকারের হয় ইয়োলো কিসমিস, ব্রাউন এবং ব্ল্যাক কিসমিস। যদিও এগুলির পুষ্টিগত গুনাগুন এবং বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। সাধারণত যে কিসমিস আমরা খেয়ে থাকি আমাদের আলোচ্য বিষয় সেগুলিকে নিয়ে। ১০০ গ্রাম কিসমিসের পুষ্টিগত গুনাগুন বা নিউট্রেশন ফ্যাক্ট,
- ক্যালোরি ২৯৯
- প্রোটিন ৩.৩ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট ৭৯.৩ গ্রাম ( ফাইবার বা শর্করা ৪.৫ গ্রাম এবং সুগার ৬৫.২ গ্রাম )।
এছাড়াও আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং মিনারেল বা খনিজ উপাদান যেরকম,
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, সিলোনিয়াম, কপার, জিংক ইত্যাদি।
- আমাদের শরীরে যদি আয়রনের অভাব হয় তাহলে আমাদের মধ্যে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আয়রন সাহায্য করে আমাদের লোহিত রক্ত কণিকাকে সৃষ্টি করতে। কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ আয়রন পাওয়া যায় তাই নিয়মিত কিসমিস খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে আয়রনের অভাব হয় না এবং রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
- যদি আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয় তাহলে আমাদের মধ্যে অস্ট্রিওপরোসিস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে আমাদের শরীরের হাড় অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আমাদের মধ্যে হাড় ভেঙে যাওয়া অথবা জয়েন্টের ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় এই ক্যালসিয়াম সাহায্য করে আমাদের শরীরে দৈনিক ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তাকে যোগান দিতে। তাই নিয়মিত কিসমিস খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের হাড় এবং দাঁত অনেক বেশি শক্ত এবং দৃঢ় হয়।
- কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার বা শর্করা পাওয়া যায়। এই শর্করা বা ফাইবার সাহায্য করে আমাদের হজম ক্ষমতা কে উন্নত করতে। এছাড়াও আমরা কিসমিসকে প্রিবায়োটিক রূপে গ্রহণ করতে পারি যা আমাদের অন্ত্রের গুড ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কিসমিস খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন এর সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
- কিসমিসের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে ফিনাল এবং পলিফিনাল পাওয়া যায়, যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রূপে কাজ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সাহায্য করে আমাদের শরীরে ফ্রি-রেডিক্যাল পরিমাণকে কম করতে। যার ফলে ফ্রি রেডিকেল দ্বারা ক্রমাগত কোষগুলির ক্ষতি হওয়া বন্ধ হয়। যার ফলস্বরূপ আমাদের মধ্যে হৃদয় সম্পর্কিত রোগ, অ্যালঝাইমার রোগ এবং ক্যান্সার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। শুধু তাই নয় নিয়মিত কিসমিস খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক উন্নত হয়।
- কিসমিসের মধ্যে পাওয়া যায় ফাইটো-কেমিক্যালস এবং অর্গানিক অ্যাসিড। যা বিভিন্ন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া কে সম্পূর্ণ কম করতে সাহায্য করে। তাই আমরা যদি প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ কিসমিস গ্রহণ করি তাহলে আমাদের মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিভিন্ন সংক্রমন এবং অত্যাধিক দুর্গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : সত্যি কি ভাত খেলে ওজন বাড়ে? জেনে রাখুন ভাত খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা।
আমরা কিসমিস কে খুব সহজেই বিভিন্ন খাদ্যের সাথে গ্রহণ করে থাকি খাদ্যের স্বাদ কে বৃদ্ধি করার জন্য। যার ফলে আমাদের খাবারের পুষ্টিগুণ অনেক বৃদ্ধি পায় এবং আমরা বেশি পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করতে পারি।
শুধু তাই নয় কিসমিস গ্রহণ করলে আমাদের এনার্জি বা শক্তি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও কিসমিস যুক্ত খাবার গ্রহণ করলে দীর্ঘক্ষণ খিদে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। যার ফলে আমাদের ওজনকে আমরা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারি।
কিসমিসের অপকারিতা :
সাধারণত কিসমিস আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণ কোন কিছুই আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়।
- কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ সুগার পাওয়া যায়। তাই যারা ইতিমধ্যে ব্লাড সুগার অথবা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত তাদের অতিরিক্ত পরিমাণ কিসমিস খাওয়া বা গ্রহণ করা একদমই উচিত নয়।
- শুধু তাই নয় কিসমিসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি পাওয়া যায় তাই যাদের ওজন অনেক বেশি তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণ কিসমিস খাওয়া একদমই উচিত নয়। তার কারণ অতিরিক্ত পরিমাণ কিসমিস খেলে মোটা হয়ে যাওয়ার বা ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : শীতকালে রান্নায় ছড়িয়ে দিন গোলমরিচ আর দেখুন ফলাফল! গোলমরিচের উপকারিতা
কিসমিসের মধ্যে খুব দ্রুত ফাঙ্গাস দ্বারা সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে তাই আমাদের উন্নত মানের অথবা ভালো কোম্পানির কিসমিস খাওয়া উচিত, না হলে পেটের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।কিসমিসের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে। তাই কিছু মানুষের কিসমিস খাওয়ার ফলে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : যদি আপনার প্রথম থেকে কোন হাই ব্লাড প্রেসার এবং হাই ব্লাড সুগারের সমস্যা থাকে তাহলে কিসমিস গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই একবার আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 5 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com