সত্যি কি ভাত খেলে ওজন বাড়ে? জেনে রাখুন ভাত খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা।

Share With Your Friends

ভাত খাওয়ার উপকারিতা

সারা বিশ্বে প্রায় কুড়ি শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ভাত খায় তাদের দৈনন্দিন খাদ্য পূরণ করার জন্য। তাছাড়াও ধান আমাদের এশিয়া মহাদেশে বিভিন্ন দেশ গুলি যেরকম ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটানে অনেক বেশি পরিমাণ চাষ হয়। 

ধান কে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চাল প্রস্তুত হয়। এই চাল আমাদের এখানে খুবই সহজলভ্য তাই চাল থেকে ভাত খুবই সহজে আমরা খাদ্য রূপে গ্রহণ করতে পারি। যদিও চাল বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে এবং এর গুণগত মান বা বৈশিষ্ট্য অনেক রকমের হয়ে থাকে, যেরকম হোয়াইট রাইস, ব্রাউন রাইস, রেড রাইস ইত্যাদি।

 

ভাত খাওয়ার উপকারিতা : 

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ভাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান পায়। তাই ভাতের পুষ্টিগত গুনাগুন সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা খুবই প্রয়োজন। ১০০ গ্রাম ভাতের মধ্যে পাওয়া যায়, 

  • ক্যালোরি ১২৪, 
  • প্রোটিন ৩ গ্রাম, 
  • কার্বোহাইড্রেট ২৬ গ্রাম, 
  • ফ্যাট ৪ গ্রাম, 
  • ফাইবার বা শর্করা ০.৯ গ্রাম

এছাড়াও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং মিনারেল। যেরকম, 

ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিংক কপার, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি। 

  • ভাতের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। এই কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীর কে শক্তির যোগান দেয়। দৈনন্দিন কাজের জন্য আমাদের যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয় তা আমরা ভাতের থেকে পেতে পারি। শুধু তাই নয় যাদের কায়িক পরিশ্রম অনেক বেশি অথবা কোন খেলাধুলার সাথে নিজেদেরকে জড়িত রাখে তাদের ক্ষেত্রে ভাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ কার্বোহাইড্রেট এর উৎস। 
  • ভাতের মধ্যে ফ্যাট এর পরিমাণ অনেক কম। আমরা জানি ফ্যাট এর ক্যালোরি সবথেকে বেশি তাই যারা নিজের ওজন কমাতে চায় তারা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভাত তাদের খাবারের তালিকায় রাখতে পারে। 
  • যাদের খাদ্য হজমে সমস্যা হয় অথবা অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগে তাদের ক্ষেত্রে ভাত খুবই উপকারী একটি খাদ্য। ভাতের মধ্যে যেহেতু কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেক বেশি তাই ভাত খুব সহজেই আমরা হজম করতে পারি। তাই নিয়মিত ভাত খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের খাদ্য হজমে কোন সমস্যা হয় না। 
  • ভাতের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাওয়া যায়, বিশেষ করে ভিটামিন বি৬। ভিটামিন বি সাহায্য করে আমাদের খাদ্যকে শক্তি তে রূপান্তর করতে, আমাদের শরীরের বিভিন্ন মাংস পেশি এবং ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত সঞ্চালন করতে। এছাড়াও ভিটামিন বি সাহায্য করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করতে। 

ভাত রান্না করা বা প্রস্তুত করা খুবই সহজ এবং কম সময় সাপেক্ষ। যেকোনো পুষ্টিযুক্ত সবজি এবং প্রোটিন যুক্ত খাদ্যের সাথে আমরা ভাত খেতে বা গ্রহণ করতে পারি। যার ফলে আমাদের দৈনিক আহারের প্রয়োজনীয়তা এবং পুষ্টিগত মান কে সম্পূর্ণ করতে পারি। 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : শীতকালে রান্নায় ছড়িয়ে দিন গোলমরিচ আর দেখুন ফলাফল! গোলমরিচের উপকারিতা

 

সত্যি কি ভাত খেলে ওজন বাড়ে?

আমাদের শরীরকে সঠিকভাবে চালাতে গেলে শক্তির প্রয়োজন হয়। আমরা যে খাবারগুলি খাই বা গ্রহণ করি সেগুলি আমাদের শরীরে ক্যালোরি হিসেবে গণ্য হয়। এই ক্যালোরি পরবর্তীকালে শক্তিতে রূপান্তর হয়। 

আমাদের শরীরকে চালনা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালোরির প্রয়োজন। আমরা যদি প্রয়োজন থেকে বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করি তাহলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায় আবার আমরা যদি প্রয়োজনের থেকে কম ক্যালোরি গ্রহণ করি তাহলে আমাদের ওজন কমে যায় বা হ্রাস পায়। 

১০০ গ্রাম ভাতের মধ্যে ১২৪ থেকে ১৩০ ক্যালোরি থাকে। ভাতের মধ্যে ফ্যাট এর পরিমাণ খুবই কম থাকে। তাই ভাত পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ করলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পাবার কোন সম্ভাবনাই নেই। বরং পর্যাপ্ত পরিমাণ ভাত গ্রহণ করলে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। 

সম্পর্কিত প্রবন্ধ : দৈনিক কফি খাওয়া সত্যি কি শরীরের জন্য ভালো? কফি খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা

 

অতিরিক্ত ভাত খাওয়ার অপকারিতা : 

আমরা যদি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ভাত গ্রহণ করি তাহলে আমাদের বিশেষ কিছু অসুবিধা হবে না কিন্তু অতিরিক্ত ভাত খাওয়া আমাদের জন্য ভালো নয়। শুধু ভাত নয় অতিরিক্ত পরিমাণ কোন খাদ্য গ্রহণ করা আমাদের শরীরের জন্য ভালো না। 

অতিরিক্ত ভাত খেলে আমাদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে যার ফলে আমাদের ডায়াবেটিস বা ব্লাড সুগার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

অতিরিক্ত পরিমাণ ভাত খেলে আমাদের শরীরে বেশি পরিমাণ ক্যালোরি প্রস্তুত হবে। কিন্তু যদি পরিশ্রমের দ্বারা আমরা সেই ক্যালোরি কে খরচ না করি তাহলে আমাদের শরীরে চর্বি বা মেদ বাড়তে পারে, যার ফলস্বরূপ আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়। 

 

বিশেষ দ্রষ্টব্য : যদি আপনার আগে থেকেই কোন রকম শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে, যেরকম ব্লাড সুগার, হাই পেশার ইত্যাদি,  তাহলে ভাত খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একবার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন। 

 


Share With Your Friends