চুল আমাদের সৌন্দর্যের প্রতীক তার কারণ আমাদের দেখতে কতটা সুন্দর লাগছে তা অনেকটাই নির্ভর করে আমাদের চুলের উপর। আমাদের মাথায় খুব কম পরিমাণ চুল, রুক্ষ এবং শুষ্ক চুল যেমন আমাদের সৌন্দর্যকে কম করে, ঠিক একইভাবে কম করে মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস কে।
আমরা চেষ্টা করি সব সময় আমাদের চুলকে উজ্জ্বল, শক্ত ও সিল্কি রাখতে, তাই একটি প্রশ্ন আমাদের মধ্যে সবসময় আসে যে চুলে কি দিলে চুল ভালো থাকে?
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজের জন্য আমরা আমাদের চুলের যত্ন নিতে পারি না। আমাদের অজান্তে বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক বা কেমিক্যাল যুক্ত শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং তেল আমাদের চুলে আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে যাচ্ছি।
যার ফলস্বরূপ পরবর্তী সময় আমাদের চুল অনেক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং চুল উঠে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় যার প্রভাব আমাদের সৌন্দর্যের উপর পড়ে। তাই আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় চুলে কি দিলে চুল ভালো থাকে এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চুলকে শক্ত, উজ্জ্বল ও সিল্কি করার উপায় সম্পর্কে।
চুলে কি দিলে চুল ভালো থাকে?
জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুলের পরিচর্যা করা:
আমাদের চেষ্টা করা উচিত বেশিরভাগ সময় জৈব শ্যাম্পু আমাদের চুলে প্রয়োগ করে পরিষ্কার করে আমাদের চুলকে ধুয়ে নিতে।
এখানে জৈব শ্যাম্পু বলতে সেই সমস্ত শ্যাম্পু গুলির কথা বলা হয়েছে যাদের মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ অথবা কেমিক্যাল এর পরিমাণ অনেক কম এবং গুণমান যুক্ত জৈব পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি। যেরকম অনিয়ন যুক্ত শ্যাম্পু, অ্যালোভেরা যুক্ত শ্যাম্পু, নিম যুক্ত শ্যাম্পু, আলমন্ড এবং দুধ যুক্ত শ্যাম্পু ইত্যাদি।
প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর আমরা আমাদের চুলে জৈব বা অর্গানিক কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারি প্রয়োজন অনুযায়ী।
তেল ব্যবহার করে চুলের পরিচর্যা করা :
প্রতি সপ্তায় দুই দিন, এক থেকে দুই ঘন্টার জন্য তেল আমাদের চুলে ভালো করে প্রয়োগ করতে হবে। তারপর জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে আমাদের চুলকে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে।
আমাদের মাথার চুলে ব্যবহারের জন্য সবথেকে ভালো তেল গুলির মধ্যে নারকেল তেল, আলমন্ড যুক্ত তেল, অনিয়ন অয়েল বা পেঁয়াজ যুক্ত তেল, ক্যাস্টর অয়েল, খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপরে উল্লেখিত তেল গুলি পরিবর্তনস্বরূপ বা অল্টারনেটিভ ভাবে আমাদের চুলে ব্যবহার করতে পারি।
জৈব পদার্থ ব্যবহার করে চুলের পরিচর্যা করা :
নিয়মিত জৈব পদার্থ আমাদের চুলে ব্যবহার করলে আমাদের চুল অনেক সুস্থ থাকে, আমাদের মাথার ত্বকে কোনরকম ইনফেকশন অথবা সংক্রমণ হয় না এবং খুশকি হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায়। তাই বিভিন্ন প্রকার জৈব পদার্থ ব্যবহার করে আমরা আমাদের চুলকে অনেক বেশি শক্ত, উজ্জ্বল এবং সিল্কি করতে পারি।
- জৈব পদার্থ যেরকম, প্রতি সপ্তাহে এক দিন, দুই থেকে তিন চামচ পাতি লেবুর রস আমাদের চুলে প্রয়োগ করে জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে পারি।
- প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন, একটি ডিমের সাদা অংশ আমাদের চুলে সরাসরি ব্যবহার করতে পারি ৪৫ মিনিটের জন্য, তারপর জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে আমাদের চুল ধুয়ে নিতে হবে।
- প্রতি সপ্তাহে একদিন অ্যালোভেরা পাতার জেল আমাদের চুলে সরাসরি ব্যবহার করতে পারি এক ঘন্টার জন্য। তারপর জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে আমাদের চুল পরিষ্কার করে নিতে হবে বা ধুয়ে নিতে হবে।
- প্রতি সপ্তাহে একদিন, দুই থেকে তিন চামচ অ্যাপেল সিডর ভিনিগার আমাদের চুলের ব্যবহার করতে পারি। তারপর জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে আমাদের চুল ধুয়ে নিতে হবে।
- প্রতি সপ্তায় এক থেকে দুই দিন অর্গানিক হেনা আমাদের চুলে ব্যবহার করতে পারি দুই থেকে তিন ঘন্টার জন্য। তারপর জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে আমাদের চুল ধুয়ে নিতে হবে।
- প্রতি সপ্তাহে একদিন টক দই আমাদের চুলে সরাসরি প্রয়োগ করতে পারি এক ঘন্টার জন্য। তারপর জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে আমাদের ধুয়ে নিতে হবে।
উপরে উল্লেখিত জৈব পদার্থগুলো পরিবর্তন স্বরূপ অথবা অল্টারনেটিভ ভাবে আমাদের চুলে আমরা ব্যবহার করতে পারি।
বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে চুলের পরিচর্যা করা:
চুলে কি দিলে চুল ভালো থাকে তা নিয়ে আমরা অনেক আলোচনা করেছি কিন্তু শুধুমাত্র বাহ্যিক দিক দিয়ে চুলকে যত্ন করলে হবে না। বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের চুলকে অনেক বেশি শক্ত করতে পারি এবং চুল উঠে যাওয়ার প্রবণতাকে কম করতে পারি।
আমাদের মাথার ত্বকে অবস্থিত ফলিকল গুলির মধ্যে থেকে আমাদের চুলের সৃষ্টি হয়। কেরাটিন নামক এক প্রকার প্রোটিন আমাদের চুল গঠনে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহণ করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন যেরকম বায়োটিন বা ভিটামিন বি ৭, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই।
কিছু খাদ্য যার মধ্যে প্রোটিন এবং উপরে আলোচিত ভিটামিন গুলি অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। যেরকম,
- গাজর, পালং শাক, মিষ্টি আলু,
- মুরগির ডিম এবং মাংস, বিভিন্ন প্রকার মাছ,
- দুধ , পনির এবং টক দই,
- পেয়ারা, কমলালেবু এবং সরবতি লেবু, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।
কিছু সতর্কতা অবলম্বন এর মাধ্যমে চুলকে ভালো রাখার উপায় :
চুলে কি দিলে চুল ভালো থাকে সেই বিষয় গুলি নিয়ে আমরা এতক্ষণ আলোচনা করেছি কিন্তু আমাদের জেনে রাখা উচিত যে কিভাবে আমাদের চুলকে ভালো রাখবো বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে।
- অত্যাধিক সূর্যের তাপ এবং প্রখর রোদ্দুর আমাদের চুলের জন্য ভালো নয়। তাই সূর্যের প্রখর রোদ্দুরে যাওয়ার পূর্বে আমাদের চুলকে রক্ষা করতে হবে ছাতা ব্যবহার করে।
- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং খুব বেশি দূষণযুক্ত পরিবেশ আমাদের চুলের জন্য ভালো নয়। তাই ওই পরিবেশ থেকে ফেরার পর আমাদের চুলকে জৈব শ্যাম্পু ব্যবহার করে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
- প্রাকৃতিকভাবে আমাদের চুলকে সোজা করার অনেক উপায় আছে। তাই যতটা সম্ভব কোন কৃত্রিম তাপ উৎপন্নকারী যন্ত্র কম ব্যবহার করা উচিত আমাদের চুলকে সোজা করার জন্য।
- প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের চুলকে বিভিন্ন রং করা সম্ভব তাই যতটা সম্ভব অ্যামোনিয়া যুক্ত কেমিক্যাল আমাদের চুলে ব্যবহার না করা উচিত চুলের বিভিন্ন রঙের জন্য।
- প্রতিদিন স্নানের পর আমাদের চুলকে ভালো করে শুকিয়ে নেওয়া উচিত এবং তারপর চুলে চিরুনি ব্যবহার করা উচিত।
- সর্বশেষ আমাদের স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। প্যাকেট ফুড, পিজ্জা, বার্গার এবং বাহিরের অত্যাধিক তেল জাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাদ্যগুলি না গ্রহণ করাই আমাদের শরীর এবং চুলের জন্য ভালো।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: উপরে উল্লেখিত দ্রব্য গুলি ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই একবার আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন। তার কারণ বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন বস্তুতে অ্যালার্জি থাকতে পারে যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি ক্ষতিকর।
I see your site needs some unique articles. Writing manually is time consuming, but there is solution for this.
Just search for; Masquro’s strategies
ok, we will think about this by the way thank you so much.