বিটরুটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল বা খনিজ উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে। তাই নিয়মিত বিটরুট খেলে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
বিটরুটের পুষ্টিগত গুনাগুন অনেক বেশি এবং খুবই সহজলভ্য। যেহেতু ভারতবর্ষের উত্তরপ্রদেশে সব থেকে বেশি বিটরুট উৎপন্ন হয় তাই এর মূল্য অনেক কম। আমরা নিয়মিত বিটরুট সবজি হিসবে গ্রহণ করে থাকি বা খেয়ে থাকি, কিন্তু বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমাদের অবগত হওয়া খুবই প্রয়োজন।
বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা :
আমরা সাধারণত বিটরুট কে স্যালাড এর সাথে এবং বিভিন্ন তরকারির সাথে গ্রহণ করে থাকে। তবে কাঁচা বিটরুট সেদ্ধ বা বয়েল করার থেকে বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হয়। ১০০ গ্রাম বিটরুটের পুষ্টিগত গুনাগুন বা নিউট্রেশন ফ্যাক্ট,
- ক্যালোরি ৪৩,
- প্রোটিন ১.৬১ গ্রাম,
- কার্বোহাইড্রেট ৯.৫৬ গ্রাম,
- ফাইবার বা শর্করা ২.৮ গ্রাম,
এছাড়া পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং মিনারেল বা খনিজ উপাদান যেরকম,
ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, জিংক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম ইত্যাদি।
- বিটরুটে প্রচুর পরিমাণ নাইট্রেটস পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরের মধ্যে গিয়ে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তর হয়। যার ফলস্বরূপ আমাদের শরীরে রক্তচাপ অনেক কমে যায় অথবা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমাদের রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। তাই নিয়মিত বিটরুট খেলে আমাদের রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং হৃদয় সম্পর্কিত রোগ হবার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
- বিটরুটের মধ্যে আলফা-লাইপোইক অ্যাসিড নামক এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায়। এই আলফা-লাইপোইক অ্যাসিড সাহায্য করে আমাদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং আমাদের রক্তের ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে। তাই নিয়মিত বিটরুট খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের হাই ব্লাড সুগার অথবা ডাইবেটিস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
- ১০০ গ্রাম বিটরুটের মধ্যে প্রায় ৩ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। ফাইবার আমাদের পাচনতন্ত্রকে উন্নত করে এবং আমাদের অন্ত্রের মধ্যে অবস্থিত গুড ব্যাকটেরিয়া গুলির পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত বিটরুট খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের হজম ক্ষমতা অনেক উন্নত হয় এবং কনস্টিপেশন বা কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
- বিটরুটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাওয়া যায়। এই ভিটামিন গুলি সাহায্য করে আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমণ বা ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনাকে কম করতে। তাই নিয়মিত বিটরুট খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেম অনেক উন্নত হয়।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : প্রতিদিন কাঁচা পেঁয়াজ খান? কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
- বিটরুটের মধ্যে পাওয়া যায় ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান। এই অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান সাহায্য করে আমাদের শরীরে কোষগুলির ক্রমাগত ক্ষতিকে কম করতে, যার ফলে আমাদের শরীরে ব্যথা বা যন্ত্রণা অনেক কমে যায়। এছাড়াও ভিটামিন ই সাহায্য করে আমাদের ত্বক বা স্কিন কে উন্নত করতে।
- বিটরুটের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পাওয়া যায়। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সাহায্য করে আমাদের শরীরে ক্রমাগত ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে কম করতে। তাই নিয়মিত বিটরুট খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যায় যদিও এ বিষয়ে আরো অনেক তথ্যের প্রয়োজন আছে।
- বিটরুটের রস বা জুস খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে আমাদের রক্তের নাইট্রেটের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা আমাদের খেলাধুলা বা এক্সারসাইজ এর সম্ভাব্য উপকারিতা কে আরো বেশি বৃদ্ধি করে। শুধু তাই নয় বিটরুট খাবার কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের এনার্জি বা শক্তি অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। তাই যারা খেলাধুলা বা এক্সারসাইজের সাথে জড়িত, তাদের জন্য বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
বিটরুট খাওয়ার অপকারিতা :
সাধারণত পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটরুট খাওয়া বা গ্রহণ করার বিশেষ কোন অপকারিতা নেই তবে কোন কিছুই অতিরিক্ত পরিমাণ গ্রহণ করা বা খাওয়া আমাদের জন্য ভালো নয়।
- বিটরুটের মধ্যে অক্সালেট পাওয়া যায় তাই অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের কিডনিতে স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে বিটরুট খেলে বা গ্রহণ করলে আমাদের বদহজম, পেটের সমস্যা, এমনকি বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- অতিরিক্ত পরিমাণ বিটরুট খেলে আমাদের রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার অনেক বেশি কমে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।
- অনেক মানুষ আছে যাদের বিটরুট খেলে এলার্জি হবার সম্ভাবনা থাকে।
সম্পর্কিত প্রবন্ধ : কলমি শাকের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে ৯ টি বিস্ময়কর তথ্য
বিশেষ দ্রষ্টব্য : আপনার যদি পূর্বে থেকে কোনরকম শারীরিক সমস্যা থাকে তাহলে বিটরুট খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই একবার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন।
Thank you everyone for coming to our website www.healthybangla.in and a warm welcome to all of you.
Hi, my name is Arunima Morial and I am from Kolkata, India.
I have been writing health related articles for the last 5 years.
All the articles me and my team write are always reviewed by Sagar Ghosh (Science Graduate, Location- Shyamnagar, West Bengal).
We always share the reference web page link from where we get correct information in the article.
Please feel free to contact me on my email ID sg133322@gmail.com